বন্য প্রাণীর গুরুত্ব (Importance of wildlife)
বন্য প্রাণীর গুরুত্ব (Importance of wildlife)
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
পূর্বে একটি ব্লগে আমি বন্য প্রাণী ও উদ্ভিদের সংরক্ষিত স্থান, বিভিন্ন প্রকারের জঙ্গলের বিষয়ে একটা প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজ আলোচনা করবো এই জঙ্গলের বন্য প্রাণ নিয়ে। একসময় কত রাজা মহারাজার শিকারের গল্প পড়ে বা শুনে আমরা শিহরিত হয়েছি, কিন্তু এই শিকার আজ অতীত। পিছনের কয়েক দশকে মানুষ বন্য প্রাণীর গুরুত্বের কথা বুঝেছে তাই শিকার আজ বন্ধ হয়েছে। তবে মাঝে মাঝেই সংবাদ পত্রে বিভিন্ন চোরা শিকারের কথা কিংবা বন্য প্রাণী আটক হওয়ার কথা জানতে পারি, ভেবে দুঃখ পাই কিভাবে জীবগুলিকে অনৈতিক এবং অমানবিক ভাবে হত্যা করা হয়েছে বা হচ্ছে ! এই প্রকার বন্যপ্রাণী হত্যা আটকানোর জন্যে সরকার বাহাদুর নানান আইন প্রণয়ন করেছেন, বনবিভাগ সদা সর্বদা সজাগ রয়েছে এ ধরণের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্যে। এর পাশাপাশি আরও নানান ভাবে কিন্তু বনের ক্ষতি হতে পারে বা হচ্ছে। যেমন, বনভূমি কেটে ফেলে, সেখানে মানুষের বসতি, কল কারখানা, ইত্যাদি গড়ে বা বনভূমিকে কৃষিভূমিতে পরিণত করলেও কিন্তু তা বনের ক্ষতিসাধন করে। আবার পরিবেশ বদলের প্রতিফলনও বনের উপর পড়ছে। আমরা জানি বন্য প্রাণী বা উদ্ভিদ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বাস্তুতন্ত্রে তারা কত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এবং তারা বিলুপ্ত হয়ে গেলে মনুষ্য সমাজেও কিন্তু দুর্ভোগ নেমে আসবে, তা বলাই বাহুল্য। আজ আমাদের আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয় এটি, বন্য প্রাণীর গুরুত্ব।
ইকোলজি (Ecology) বা বাস্তুশাস্ত্রের যে শাখা জীব বৈচিত্র নিয়ে অধ্যয়ন করে তা কমিউনিটি ইকোলজি (Community ecology) নামে পরিচিত। কোনো একটি ভৌগোলিক স্থান জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর (যেমন ট্রপিক্যাল চিরহরিৎ রেন ফরেস্ট) আবার কোনো স্থান জীব বৈচিত্র্যে তুলনামূলকভাবে দৈন (যেমন বোরিয়াল ফরেস্ট)। এর আবহাওয়া-জলবায়ু জনিত, বাস্তুতন্ত্র জনিত অনেক কারণ বর্তমান এবং তা সহজেই বোধ্য। কিন্তু গত শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে মানুষ ধীরে ধীরে লক্ষ্য করলো যে বেশ কিছু প্রাণী অবলুপ্ত হয়ে গেছে বা যাচ্ছে এবং এ যদি অনবরত ঘটতে থাকে তবে তা মনুষ্য সমাজকে বিপর্যস্ত করবে। একটি বাস্তুতন্ত্রে অনেক জীব এবং উদ্ভিদ থাকে, তারা একে অন্যের উপর নির্ভরশীল (সবাই তো খাদ্য শৃঙ্খল, খাদ্য জাল (Food chain, Food web), বাস্তুতন্ত্রের পিরামিড যেমন এনার্জি পিরামিড (Energy pyramid), বায়োমাস পিরামিড (Biomass pyramid) ইত্যাদি বিষয়ে জানে), একটির অবলুপ্তি অন্য একটির অবলুপ্তিকে ডেকে আনতে পারে, এইভাবে সমগ্র বাস্তুতন্ত্রটির (এক্ষেত্রে যেমন জঙ্গল) বিপর্যয় ঘটতে পারে। এখন মানুষ সকল প্রাণীর থেকে সরাসরি উপকৃত হয় এমন নয়, তবে সমগ্র বাস্তুতন্ত্রের থেকে তো উপকৃত হয়। একটু সহজ করে বলি, একটি জঙ্গল অনেক প্রাণী যেমন পোকা-মাকড়, মোলাস্কা, সরীসৃপ, পাখি, স্তন্যপায়ী ইত্যাদির এবং বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের বাসস্থান। মানুষ এদের প্রত্যেকের থেকে স্বতন্ত্রভাবে সরাসরি উপকৃত (মৌমাছি মধু প্রস্তুত করে, পরাগ বাহক পতঙ্গরা পরাগযোগে সাহায্য করে এবং তার ফলে ফুল-ফল-শস্য উৎপাদন হয়, ঔষধি গাছের রোগ নিরাময়ক ক্ষমতার জন্যে সংগৃহিত হয়, গাছের ফল-ফুল-পাতা, এগুলি সরাসরি উপকারের কয়েকটি উদাহরণ) নাও হতে পারে, তবে জঙ্গল সার্বিকভাবে কার্বন-ডাই -অক্সাইডকে শোষণ করে, মাটির উর্বরতাকে রক্ষা করে, জল ধরে রেখে, মাটির ক্ষয় প্রতিরোধ করে, বন্যা প্রতিরোধ করে, ইত্যাদিতে অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করে, যেগুলি মানব সভ্যতাকে সাহায্য করে। কাজেই বোঝা গেলো বন্য জীবের অবলুপ্তিতে জঙ্গল বাস্তুতন্ত্রটির অবলুপ্তি আর তার ফলশ্রুতিতে মানব সভ্যতার উপর বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। কাজেই জঙ্গলকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। এর অর্থ বন্য প্রাণী এবং উদ্ভিদকে রক্ষা করতে হবে। আর রক্ষা করতে হলে এদের সম্বন্ধে আমাদের প্রথমে অবগত হতে হবে। এখন ছোট বড়ো আকারে এতো প্রাণী, এতো উদ্ভিদ, সকলের সম্বন্ধে জানব কিরূপে? একটি বাস্তুতন্ত্রে এতো জৈব উপাদান (প্রাণী, উদ্ভিদ, শৈবাল, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস), সকলের গুরুত্ব কি এক ! না কি কেউ বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কেউ তুলনামূলকভাবে কম ! এ এক বিরাট প্রশ্ন আবির্ভূত হলো মানুষের সামনে।
প্রশ্নের উত্তর খোঁজা শুরু হলো। প্রথম ধাপ হলো পর্যবেক্ষণ। বিংশ শতকের ষাটের দশকে চার্লস এলটন (Charles Elton) প্রস্তাব করলেন যে জীব বৈচিত্র্য (প্রজাতির সংখ্যা) আর স্থায়িত্ব (যা বৈচিত্র্য-স্থায়িত্ব প্রকল্প (Diversity-Stability hypothesis) নামে পরিচিত) একটি সরলরৈখিক (সমানুপাতিক) সম্পর্ক মেনে চলে। অর্থাৎ একটি কমিউনিটিতে যত বেশি প্রজাতি, তত বেশি স্থায়িত্ব। ব্যাপারটা বোঝা গেলো। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেলো ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রাণী অবলুপ্ত হয়েছে কিন্তু তাদের বাসস্থান যে বাস্তুতন্ত্রে সেগুলি কিন্তু টিঁকে আছে, অবলুপ্তি ঘটেনি। কাজেই তবে কি সকলে বাস্তুতন্ত্রে সকলে সমান ভূমিকা পালন করছে? এবার একটা নতুন তত্ত্ব এলো, নব্বইয়ের দশকের প্রথমভাগে পল (Paul) এবং অরলিখ (Anne Ehrlich) রিভেট প্রকল্পের (Rivet hypothesis) অবতারণা করলেন। রিভেট (Rivet) কথার অর্থ ছোট পিন যা দিয়ে ধাতুর প্লেট আটকানো থাকে। একটি বাস্তুতন্ত্র এরূপ অনেকগুলি ধাতুর প্লেট দিয়ে নির্মিত আর এই রিভেটগুলি দিয়ে একটি প্লেট আরেকটি প্লেটের সাথে যুক্ত রাখে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী জীব বৈচিত্র্য অনেকটা রিভেটের মতন, প্রত্যেকেই ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখন একটি রিভেট যদি নষ্ট হয়ে যায় বা তবে তার সাথে যুক্ত প্লেটগুলি কিন্তু নড়বড় হয়ে যায়, অর্থাৎ বাস্তুতন্ত্রে একটু অসুবিধা হয়, কিন্তু বাস্তুতন্ত্রটি সেটা মানিয়ে নেয়, কয়েকটি রিভেটের ক্ষতি হলেও অনেকসময় বাস্তুতন্ত্রটি হয়তো মানিয়ে নিতে সমর্থ হয় তবে তার বেশি রিভেটের ক্ষতি হলে কিন্তু বাস্তুতন্ত্রটির পক্ষে সেটা মানিয়ে নেওয়া সম্ভবপর হয়না। পরবর্তী দশকে ব্রায়ান ওয়াকার (Brian Walker) রিডানডেন্সি প্রকল্পের (Redundancy hypothesis) অবতারণা করলেন। এটি বোঝা কিন্তু একটু সহজ। এই তত্ত্ব অনুযায়ী কোনো একটি বাস্তুতন্ত্রে অনেক জীবের মধ্যে সকলের ভূমিকা এক নয়। যেমন ধরো জাহাজ বা উড়োজাহাজ একটি বাস্তুতন্ত্র, এখানে পাইলট বা নাবিকের ভূমিকা, জাহাজ এটেন্ডেন্টদের ভূমিকা, যাত্রীদের ভূমিকা আলাদা আলাদা। এবার বোঝা যাচ্ছে, যে এই বাস্তুতন্ত্রে, মানে জাহাজ চালানোতে, নাবিকের ভূমিকা অনেক বেশি। এছাড়াও আর একটি প্রকল্প রয়েছে যা ইডিওসিনক্রেটিক প্রকল্প (Idiosyncratic hypothesis) নামে পরিচিত (তবে এ ব্যাপারে এখানে বলে ব্লগটিকে অধিক দীর্ঘ করবো না)।
কাজেই বোঝা যাচ্ছে একটি বাস্তুতন্ত্রের সকল প্রজাতির ভূমিকা আলাদা। এবার গুরুত্বের বিচারে প্রজাতিগুলিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়। প্রথমেই আসি এক ধরণের প্রজাতির দিকে যাদের কীস্টোন প্রজাতি (Keystone species) বলা হয়। আমরা যখন বিভিন্ন জঙ্গল বেড়াতে যাই তখন এরূপ কীস্টোন প্রজাতির দিকে অধিক গুরুত্ব আরোপ করি। যেমন লঞ্চে করে সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়া হয় তখন বাঘ দেখতে পেলে আনন্দের সীমা থাকে না, মনে হয় বেড়ানোটা সার্থক হলো। আবার গুজরাতের গির অরণ্যে গিয়ে সিংহ, আসামের কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে গিয়ে গন্ডার, পশ্চিমবঙ্গের জলদাপাড়া বা গরুমারাতে হাতি বা গন্ডার দর্শন প্রধান লক্ষ্য বা আকর্ষণ হয়ে থাকে। কীস্টোন প্রজাতি একটি সম্পূর্ণ বাস্তুতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করে, এর অর্থ, বাস্তুতন্ত্রটি ওই প্রজাতির উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে এবং কীস্টোন প্রজাতি ব্যতীত বাস্তুতন্ত্রটি উল্লেখযোগ্য ভিন্ন হবে বা সম্পূর্ণরূপে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। এই সকল কীস্টোন প্রজাতির উপর বাস্তুতন্ত্রটি বিশেষ ভাবে নির্ভরশীল। কীস্টোন প্রজাতি কিন্ত সাধারণভাবে তিন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন শিকারী (Predator) প্রজাতি, মিউচুয়ালিস্ট বা পারস্পরিক উপকারপ্রাপ্ত প্রজাতি (Mutualist) প্রজাতি এবং ইকোলজিকাল ইঞ্জিনিয়ার (Ecological engineer)। যেমন বাঘ একটি শীর্ষ শিকারী (Apex pyramid) প্রাণী, এনার্জি বা খাদ্য পিরামিডের উপরিভাগে অবস্থান করে, এর উপর নির্ভর করে ওই জঙ্গলের শিকারের (যেমন হরিণের) সংখ্যা, এবং সম্পর্কিত বাস্তুতন্ত্র। এনার্জি পিরামিডের দিকে তাকালে দেখা যায়, বাস্তুতন্ত্রে যথাক্রমে প্রথমে ডিকম্পোজার (Decomposer, যারা পচনে সাহায্য করে), এর উপরে প্রোডিউসার বা অটোট্রফ (Producer-Autotroph, যারা সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে নিজেদের খাদ্য নিজেরা প্রস্তুত করতে পারে যেমন উদ্ভিদ), এর উপর প্রাইমারি কনসিউমার (Primary consumer, যারা প্রোডিউসারকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, যেমন তৃণভোজী প্রাণী হরিণ ইত্যাদি), এর উপর সেকেন্ডারি কনসিউমার (Secondary consumer, যারা প্রাইমারি কনসিউমারকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে যেমন মাংসাশী প্রাণী), এর উপর টার্শিয়ারি কনসিউমার (Tertiary consumer, যারা অন্যান্য মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে), এবং সবথেকে উপরে শীর্ষ শিকারী (Apex predator, যারা প্রাইমারি, সেকেন্ডারি বা টার্শিয়ারি কনসিউমারকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, যেমন বাঘ, সিংহ, ঈগল, হাঙ্গর)। কাজেই বোঝা গেলো কোনো একটি বাস্তুতন্ত্র একেবারে শীর্ষ শিকারীর উপর নির্ভর করে। আবার গন্ডার বা হাতি ইকোলজিকাল ইঞ্জিনিয়ারের উদাহরণ, এরা নরম মাটিতে গর্ত করে, তাতে জল জমে এবং সেগুলি অন্যান্য জীবের জন্যে পানীয় জলের উৎস হয়, হাতি গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে বাস্তুতন্ত্রকে রূপ প্রদান করে, এইভাবে বাস্তুতন্ত্রটি এই প্রজাতির উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। আবার মিউচুয়ালিস্ট-র প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো মৌমাছিরা, এরা ফুল থেকে নেক্টর, পরাগ সংগ্রহ করে এবং উদ্ভিদের পরাগসংযোগে সাহায্য করে। যাইহোক, জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র বোঝাতে অনেকটা বিষয়ভিত্তিক (যদিও প্রাথমিক) আলোচনা করে ফেললাম। তবে আরও কয়েকটি প্রজাতির কথা না বললেই নয়। যেমন আমব্রেলা প্রজাতি (Umbrella species, এই প্রজাতিরা অনেকটা কীস্টোন প্রজাতির মতোই, তবেএরা একটি ভৌগোলিক অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত থাকে, যেমন সাইবেরিয়ান বাঘ), ফাউন্ডেশন প্রজাতি (Foundation species, এদের মধ্যেই রয়েছে ইকোলজিকাল ইঞ্জিনিয়াররা যার উল্লেখ আমি আগেই করেছি। এই প্রজাতিরা বাসস্থান গড়ে তুলতে বা তাকে বজায় রাখতে প্রধান ভূমিকা পালন করে, যেমন কোরাল (Coral) যা আন্দামানের কোরাল রিফ (Coral reef) গঠন করেছে), ইনডিকেটর প্রজাতি (Indicator species, এই সকল প্রজাতির বৃদ্ধি বা হ্রাস বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশগত (দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি) পরিবর্তনের সূচনা দেয়, যেমন মেফ্লাই (Mayfly)-এর হ্রাস পাওয়া জলাশয়ের দূষণকে চিহ্নিত করে, মোনার্ক বাটারফ্লাই (Monarch butterfly)-এর হ্রাস পাওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের, আবার লাইকেনের (Lichen) হ্রাস পাওয়া বাতাসের গুণমানের হ্রাস পাওয়াকে চিহ্নিত করে), ফ্ল্যাগশিপ প্রজাতি (Flagship species, এই প্রজাতিরা একটি অঞ্চলের সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকে মাসকটের মতন রিপ্রেজেন্ট করে, অনেক সময় এরা পরিবেশ বা সংরক্ষণের বিভিন্ন ক্যাম্পেন বা আলোচনার প্রতীক হিবেসেও বিবেচিত হয়, যেমন জায়েন্ট পান্ডা)।
স্বাভাবিকভাবেই এই সকল প্রজাতির, যাদের উপর একটা বাস্তুতন্ত্র উল্লেখযোগ্যভাবে নির্ভরশীল, উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়, এদের সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয় যাতে সমগ্র বাস্তুতন্ত্রটিকে সংরক্ষণ করা যায়। সাস্টেনেবেল ট্যুরিজম কিন্ত ওয়াইল্ড লাইফ এবং জীব বৈচিত্র্যের উপকার করে থাকে। তবে সে বিষয়ে বিশদে অন্য কখনও আলোচনা করবো। আপাতত এই পর্যন্ত।
বিশদে জানার জন্যে References:
Stiling, P. 2002. Ecology Theories and Application. Fourth Edition, Prentice Hall, NJ, USA.
Higginbottom, K. (Ed.) 2004. Wildlife Tourism Impacts, Management and Planning. Common Ground, CRC for Sustainable Tourism, Australia.
Cottee-Jones, H.E.W.; Whittaker, R.J. 2012. The keystone species concept: a critical appraisal. Frontiers of Biogeography 4(3): 117- 127. https://doi.org/10.21425/F5FBG12533
Hale, S.L.; Koprowski, J.L. 2018. Ecosystem-level effects of keystone species reintroduction: a literature review. Restoration Ecology. https://doi.org/10.1111/rec.12684
বি.দ্র. প্রবন্ধটি ১৯শে ডিসেম্বর ২০২২ সালে আমার ব্লগে প্রথম প্রকাশিত হয়, পুনরায় প্রবন্ধটি এই সাইটে প্রকাশিত হলো।
Blogs
Our Latest Blogs
পূর্ববর্তী ব্লগটিতে আমি সুস্থায়ী খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষায় ঐতিহ্যগত জ্ঞান কেন আবশ্যিক সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে প্রধানত আমি কারণগুলিকে উল্লেখ করেছি, তবে বিশদে উদাহরণ সহযোগে সেগুলি বর্ণনার অবকাশ এখনও রয়েছে, সে বিষয়ে আমি পরে অবশ্যই লিখবো। বর্তমান ব্লগটিতে আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কি কি উপায়ে সুস্থায়ী খাদ্য এবং পুষ্টি সুরক্ষায় এই ঐতিহ্যবাহী খাদ্যগুলি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা করবো।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 27 Jan 2025
বর্তমান আলোচনায় প্রথম প্রয়োজন ঐতিহ্যগত জ্ঞান (বা Traditional Knowledge) কি সেটা বোঝা। ঐতিহ্যগত জ্ঞান বলতে বোঝায় সঞ্চিত জ্ঞান, অনুশীলন, দক্ষতা, উদ্ভাবন এবং প্রজ্ঞাকে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কোনো সম্প্রদায় বা সমাজের মধ্যে সময়ের সাথে সাথে প্রবাহিত হয়।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 27 Jan 2025
মাছে -ভাতে বাঙালী। খাদ্য নির্বাচনের সূত্র মেনেই জলবহুল বাংলায় অনাদিকাল থেকেই মাছ বাঙালীর খাদ্য হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে। মাছ চিরকালই বাঙালির রসনাকে তৃপ্ত করার পাশাপাশি পুষ্টি প্রদান করে এসেছে।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 27 Jan 2025
পূর্ববর্তী ব্লগে পরাগসংযোগকারী কীট-পতঙ্গ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছিলাম (অনুগ্রহ করে পড়ুন খাদ্য এবং পুষ্টি নিশ্চয়তায় পরাগ-সংযোগকারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা)। বর্তমান ব্লগটিতে কীট-পতঙ্গ ছাড়া অন্য কয়েকটি প্রাণী নিয়ে আলোচনা করবো যারাও পরাগায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 27 Jan 2025
কীট-পতঙ্গ, বিশেষত পরাগ বহনকারী বা পরাগ-সংযোগকারী কীট-পতঙ্গ (Pollinator), আমাদের খাদ্য উৎপাদনের জন্যে অপরিহার্য। যে সকল খাদ্যশস্য আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি তার প্রায় ৭৫% পরাগ-সংযোগকারী প্রাণীদের উপর নির্ভর করে, এই সকল পরাগ-সংযোগকারী প্রাণীদের মধ্যে কীট-পতঙ্গ উল্লেখযোগ্য।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 26 Jan 2025
ইতিপূর্বে খাদ্যের রূপান্তরের সম্বন্ধে একটি ব্লগে আমি সবিস্তারে আলোচনা করেছি। বর্তমানেও এর ধারা অব্যাহত। এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে, যেমন অর্থনৈতিক উন্নতি বা আয় বৃদ্ধি, নগরায়ন, এবং অবশ্যই বিশ্বায়ন। বর্তমান আলোচনাটি আমি সীমাবদ্ধ রাখবো খাদ্য ব্যবস্থার উপরে বিশ্বায়নের প্রভাবের বিষয়ে।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 26 Jan 2025
আমরা আমাদের খাদ্যের দিকে একটু তাকাই, দেখবো খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে, তা ব্যবহার হচ্ছে এবং অব্যবহৃত অংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা একটা সরলরেখার ন্যায় (Linear economy)। উৎপাদন-ব্যবহার-নষ্ট (Make-Take-Waste)। কিন্তু এই যে অংশটি ব্যবহার হচ্ছে না, তা উৎপাদন করতেও তো পয়সা লেগেছে। শুধু যে পয়সা লেগেছে, এমনটা নয়, জমি লেগেছে, জল লেগেছে, সার লেগেছে, আবার সেই অতিরিক্ত সার পরিবেশের উপর ঋণাত্মক প্রভাবও ফেলেছে - এ সকলই তো বৃথা গেলো, কোনো উপকার তো হলোই না, বরং অপকার হলো। কাজেই, এই উৎপাদন-ব্যবহার-নষ্ট (Make-Take-Waste) মডেলটি কার্যকরী হচ্ছে না। তবে কি করতে হবে? এই সরলরৈখিক সম্পর্কটিকে বৃত্তাকার সম্পর্কে (Circular economy) পরিণত করতে হবে।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 26 Jan 2025
আনদং থেকে সাড়ে ন'টার বাসে রওনা হয়ে পূর্ব সোলে (Dong Seoul) এসে পৌঁছলাম প্রায় দুপুর সোয়া এক'টায়। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা রেস্তোরাঁ।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 26 Jan 2022
পূর্বের একটি ব্লগে আমি (বাস্তুতন্ত্রের সেবা প্রদান এবং খাদ্য) বাস্তুতন্ত্র কিরূপে আমাদের খাদ্য সংস্থান বিষয়ে পরিষেবা প্রদান করে সেই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। এই ব্লগটিতে বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে খাদ্য সংকট উৎপন্ন হচ্ছে তার মোকাবিলা বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভর করে কিরূপে করা সম্ভব তার উপর আলোচনা করবো।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 23 Jan 2025
'আঃ বড্ড দাম নিচ্ছ, তরকারীতে তো হাত দেওয়ার উপায় নেই গো'। খদ্দেরের অভিযোগ শুনে বিক্রেতা একগাল হেসে, 'আমরাও তো দাম দিয়ে কিনে আনি বাবু, কতটুকু আর লাভ থাকে! তবে মাল আমার এখানে এক্কেবারে টাটকা' এই বলে প্রয়োজনীয় সব্জিগুলি খদ্দেরকে গুছিয়ে দিয়ে দেয়।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
পূর্বে একটি ব্লগে আমি বন্য প্রাণী ও উদ্ভিদের সংরক্ষিত স্থান, বিভিন্ন প্রকারের জঙ্গলের বিষয়ে একটা প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজ আলোচনা করবো এই জঙ্গলের বন্য প্রাণ নিয়ে।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
পূর্বের ব্লগটিতে আমি বিভিন্ন প্রকার ফরেস্ট বা জঙ্গলের বর্ণনা করেছি। এই ব্লগটিতে আমি দক্ষিণ কোরিয়ার ফরেস্টের কয়েকটি ছবি দিলাম, বছরের বিভিন্ন সময় টেম্পারেট ফরেস্টের বিভিন্ন রূপ।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যারা জঙ্গলকে (ফরেস্ট/Forest) খুব ভালোবাসেন, প্রকৃতির হাতছানিতে, জীবজন্তু কিংবা উদ্ভিদের আকর্ষণে প্রায়ই, বা সপ্তাহান্তে, বেরিয়ে পড়েন জঙ্গলের উদ্দেশ্যে। আমার এই ব্লগের উদ্দেশ্য জঙ্গল সম্বন্ধে প্রাথমিক আলোচনা করা, বিভিন্ন প্রকার সংরক্ষিত স্থান (মূল উদ্দেশ্য- সংরক্ষণ), বিভিন্ন প্রকার জঙ্গলের (পরিবেশগত ভাবে) আলাদা আলাদা চরিত্র ইত্যাদি নিয়ে একটু চর্চা করা।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
এবার একটু সরীসৃপ (Reptiles; class: Reptilia) প্রাণীদের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক। আনদং-র চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের সংগ্রহে অনেক সরীসৃপ প্রাণী এখানে প্রদর্শনের জন্যে রেখেছেন।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
আনদং-এ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে, ১০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই একটি ছোট চিড়িয়াখানা রয়েছে। আমরা সপ্তাহান্তে প্রায়ই সেখানে যাই।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 22 Jan 2025
ইতিপূর্বে পুষ্টি সুরক্ষা ও খাদ্য সংস্থান সম্পর্কিত ৪ টি পর্ব লিখেছি, সেখানে মিলেট, শাক, ডাল ইত্যাদির বিষয়ে উল্লেখ করেছি। আজ এই পর্বে একটু অন্য প্রকারের খাদ্যের কথা উল্লেখ করবো, যা বহুলভাবে ব্যবহৃত হলেও অতটা পরিলক্ষিত হয় না। ফার্মেন্টেড ফুড (Fermented foods) বা সন্ধানীকৃত খাদ্য এবং পানীয়ের কথা বলছি।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 20 Jan 2025
ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় তাঁর 'বাঙালীর ইতিহাস' গ্রন্থে প্রাচীন বাংলায় বাঙালির খাদ্যতালিকায় ডালের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 20 Jan 2025
বর্তমান পৃথিবীতে অন্যতম একটি সমস্যা হল 'মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ডেফিসিয়েন্সি' (Micro-nutrient deficiency), যা অনেক সময় 'হিডেন হাঙ্গার' (Hidden hunger) বলেও পরিচিত।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 20 Jan 2025
ভারতবর্ষ ২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক মিলেট বৎসর হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব করেছিল, যা ফুড এবং এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (Food and Agriculture Organisation of United Nations) ও জাতিসংঘের (United Nations) সাধারণ পরিষদ অনুমোদন করেছে (FAO events)। আমরা এই পর্বে আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মিলেট নিয়ে আলোচনা করবো।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 17 Jan 2025
পুষ্টি সুরক্ষা এবং খাদ্য সংস্থান- পর্ব-১: সূচনা (Nutrition Security and Food – Part-1: Introduction)
বর্তমান ভারতবর্ষের তথা পৃথিবীর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো অপুষ্টি। ভারতবর্ষের দিকে দৃকপাত করলে, ক্ষুধা এবং পুষ্টি সংক্রান্ত সমসাময়িক কালে যে সকল প্রতিবেদন উঠে আসছে তার কোনোটিই যে অতি আশাপ্রদ নয় এ কথা বলাই বাহুল্য। স্বাধীন ভারতবর্ষে দেশবাসীর খাদ্য সুরক্ষা হেতু একাধিক প্রকল্পের প্রবর্তন হয়েছে।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 17 Jan 2025
খাদ্য থেকে পুষ্টি সংগৃহীত হয়, যার মাধ্যমে জীব প্রাণ ধারন করে। অতএব সকল জীবের ন্যায় মানুষের খাদ্য এবং পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। খাদ্য থেকে প্রাপ্ত শক্তি এবং খাদ্যগ্রহনের পর শারীরিক উপযুক্ততা জীবকে খাদ্য নির্ধারণে সহায়তা করে। আবার, আহার তালিকায় খাদ্যবস্তুর সংযোজন বা বিয়োজন হলো খাদ্যতালিকা বা আহারের রূপান্তর।
- সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
- 17 Jan 2025