Blog Details - Jibon Jatrar Journal

মালদা: পর্ব-২ (Malda: Part-2)

মালদা: পর্ব-২ (Malda: Part-2)

মালদা ভ্রমণের প্রথম পর্বটি পড়ার জন্যে ক্লিক করুন মালদা: পর্ব-১

গতকাল রেডিওতে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙলো বেশ ভোরে। হোটেলে প্রাতঃরাশ সকাল ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত। আমরা পৌনে ন’টার মধ্যে প্রাতঃরাশ সেরে ন’টা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। গতকালই আমি অটো-র জন্যে বলে রেখেছিলাম। সঠিক সময়ে আমাদের অটো চালক দাদা এসে গিয়েছিলেন। বর্তমানে মালদা শহরের দক্ষিণে গৌড় এবং উত্তরে রয়েছে পাণ্ডুয়া। আমরা সকালে প্রথমে গৌড় ঘুরে মধ্যাহ্নভোজন সেরে পাণ্ডুয়া ঘুরতে যাবো। ঐতিহাসিক স্থানের বর্ণনা দিতে গেলে একটা কালানুক্রম বজায় রাখা প্রয়োজন, তবেই পারম্পর্য বোঝা যায়, নচেৎ স্থানটিকে অনুধাবন করা মুশকিল হয়ে যায়, তবে ঘোরা তো আর সেইভাবে হয় না, যে স্পটটি আগে পরে সেটি আগে ঘুরে নিতে নয়। তাই আমি এখানে আমার বেড়ানো অনুযায়ী নয় বরং ইতিহাসের হাত ধরে পাঠক-পাঠিকাকে আমাদের বেড়ানোটির বর্ণনা করবো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক স্থাপত্যটির সম্বন্ধে যে বর্ণনা পুরাতত্ত্ব বিভাগের বোর্ডে লেখা রয়েছে তার চিত্র দেওয়ার চেষ্টা করবো যাতে পাঠক পাঠিকা তথ্য সম্বন্ধে সেখান থেকেও অবগত হতে পারেন।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এটি একটি ঐতিহাসিক স্থানের ভ্রমণকাহিনী (গবেষণাধর্মী বা গবেষণা নির্ভর ঐতিহাসিক প্রবন্ধ নয়) যার অন্যতম উপাদান স্থানীয় গাইডদের প্রদত্ত তথ্য, সাহিত্যের বিভিন্ন উপাদান, প্রচলিত লোককথা, বিশ্বাস ইত্যাদি।

যে গৌড়ের প্রতি অসীম আগ্রহে আমরা এসে পৌঁছলাম, তখন সেখানে লক্ষণাবতী নামে এক নগর ছিল। কাশী জয় করে প্রবল পরাক্রমী লক্ষণ সেন নৌ-পথে এসে পৌঁছলেন মহানগরে। তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্যে পিতা বল্লাল সেনের রাজপ্রাসাদ বল্লালবাটী তো বটেই সেজে উঠেছিল সমগ্র নগর। আজ আমরা যে ধ্বংসাবশেষের পাশে দাঁড়িয়ে আছি, তাই অতীতের বল্লালবাটী, বল্লাল সেনের রাজপ্রাসাদ। জানিনা আর কতদিন এই অবশেষটুকু টিঁকবে, বিশেষ কোনো সংরক্ষণ চোখে পড়েনি।

প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষের নিকটেই রয়েছে জাহাজঘাটা, এখানেই নাকি জাহাজ এসে নোঙ্গর করতো সেই সময়ে।

এই সেই সেন বংশ (১৭৭০-১২৩০ খ্রিস্টাব্দ) যার প্রবল পরাক্রমে পাল বংশের রাজা গোপালদেব ত্যাগ করলেন বঙ্গদেশ। পরাজিত হৃতসর্বস্ব রাজা গোপালদেব আশ্রয় গ্রহণ করলেন মগধে। পাল বংশের রাজত্ব অস্তমিত হলো, ধন-সম্পত্তি বিলুপ্ত হলো, কামরূপ থেকে প্রয়াগ পর্যন্ত একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলো সেন বংশের, কিন্তু পাল বংশের উদারতা, শিক্ষা-দীক্ষা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা, উন্নত সমাজচেতনা- এসব কিন্তু আজও প্রশংসিত, সম্পূর্ণ মুছে দিতে পারলো না পরবর্তী শাসক। এর একটি নিদর্শন রয়েছে মালদা জেলার হাবিবপুর ব্লকের জগজ্জীবনপুর আর্কিওলজিক্যাল সাইটটিতে। সময়ের অভাবে আমরা যেতে পারিনি তবে পর্যটকরা দেখে আসতে পারেন। সাইটটি মালদা শহরের কেন্দ্র ইংরেজ বাজার থেকে প্রায় ৪১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই স্থান থেকে পাওয়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে পাল সম্রাট মহেন্দ্রপালদেবের একটি তাম্র-ফলক শিলালিপি এবং নবম শতাব্দীর একটি বৌদ্ধ বিহারের কাঠামোগত অবশেষ যা নন্দদীর্ঘিকা-উদ্রাঙ্গ মহাবিহার নামে পরিচিত।

এরপর অনেক দিন অতিবাহিত হয়েছে। কালের নিয়ম মেনেই একের পর এক শাসক এসেছেন, প্রবল পরাক্রমে নিজেকে ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে প্রতিষ্ঠা করেছেন, আবার কালের নিয়মেই সে যুগের সমাপ্তি হয়েছে। বাংলায় সেন পরে বখতিয়ার খিলজির হাতে গড়ে উঠেছে খিলজি সাম্রাজ্য, তারপর দিল্লি সালতানাত মামলুক এবং তুঘলক সাম্রাজ্যের অধীনে বাংলায় গভর্নর নিযুক্ত হন। তুঘলক সাম্রাজ্যের মাঝামাঝি সময় থেকে ইলিয়াস শাহী বংশের হাত ধরে বাংলার স্বাধীন সুলতানী যুগের আরম্ভ হয়।

বাংলায় তখন ইলিয়াস শাহী বংশের রাজত্ব (১৩৫২ থেকে ১৪১৪ খ্রিস্টাব্দ) চলছে। ইলিয়াস শাহী বংশের দ্বিতীয় সুলতান সিকান্দার শাহের (১৩৫৮ থেকে ১৩৯০ খ্রিস্টাব্দ) শাসনকালে নির্মিত হয় এই আদিনা মসজিদ। দিল্লীর সুলতানী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে দুই বার জয়লাভের (যথাক্রমে ১৩৫৩ এবং ১৩৫৯ খ্রিস্টাব্দ) এই মসজিদটি ছিল এই বংশের উচ্চাশার একপ্রকার প্রকাশ। মসজিদটির দেওয়ালের লিপিতে সুলতান সিকান্দার শাহকে একজন ‘মহিমান্বিত সুলতান’ বা ‘বিশ্বস্থতার খলিফা’ বলে বর্ণিত হয়েছে।

ইলিয়াস শাহী বংশের পরে আসে রাজা গণেশের বংশ (১৪১৪ থেকে ১৪৩৫ খ্রিস্টাব্দ)। রাজা গণেশের পুত্র সুলতান জালাউদ্দিন মুহম্মদ শাহ, জন্মগত ভাবে হিন্দু হলেও পরবর্তীকালে উনি মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, নির্মাণ করেন এই একলাখি মাজারটি। কথিত রয়েছে এই মাজারটি তৈরী করতে তৎকালীন সময়ের এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল, তাই সমাধিসৌধটির নাম হয় একলাখি মাজার।

মাজারটির প্রবেশপথের ভাস্কর্য, টেরাকোটার কাজ, আট দিক বিশিষ্ট স্তম্ভ দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

রাজা গণেশের হাতে ইলিয়াস শাহী বংশের পতন হলেও, রাজা গনেশের বংশ অধিক কাল যাবৎ স্থায়ী হয়নি। ১৪১৪ খ্রিস্টাব্দে রাজা গনেশ প্রথমবারের জন্যে সিংহাসন আরোহন করেন আর এই বংশের রাজত্বকাল চলে ১৪৩৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। অতঃপর নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের হাত ধরে পুনরায় বাংলায় ইলিয়াস শাহী বংশের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়। নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের পুত্র রুকুনুদ্দিন বরবক শাহের আমলে বাইশ গাজি প্রাচীরের নির্মাণ হয়। বাইশ গজ উচ্চতার জন্যে এর নাম বাইশ গাজি হয়েছে। বহিঃশত্রুর হাত থেকে নগরকে সুরক্ষিত রাখার জন্যেই এর প্রাচীর নির্মাণ করা হয় বলে মনে হয়। বর্তমানে প্রাচীরের অনেকাংশ ভগ্নপ্রায় এবং এর সংরক্ষণের প্রয়োজন।

নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের পৌত্র শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ (রুকুনুদ্দীন বরবক শাহের পুত্র)-র শাসনকালে চামকাটী মসজিদটিও নির্মিত হয়।

চমকাটী বা চিকা মসজিদের উত্তরপূর্ব দিকে অবস্থিত গুমটি দরওয়াজা। সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই তোরণটি নির্মাণ করান, যা গৌড়ের পূর্বদিকের প্রবেশ পথ ছিল।

এখনও কয়েকটি টালির গাত্রে রঙ বিদ্যমান রয়েছে, তবে আর কতদিন এগুলি স্থায়ী হবে তা জানিনা।
এর পরের গন্তব্য দাখিল দরওয়াজালক্ষণাবর্ত বা পরবর্তীকালের লাখনৌটির দুর্গের প্রবেশদ্বার এই দাখিল দরওয়াজা। ইলিয়াস শাহী বংশের দ্বিতীয় পর্বে (১৪৩৫ থেকে ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দ) নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের এই প্রবেশদ্বার নির্মিত হয়। তবে এই প্রবেশদ্বারের নির্মাণ এবং পুনঃনির্মাণ  নিয়ে ঐতিহাসিক মতান্তর রয়েছে।  মনে করা হয়দাখিল দরওয়াজার  বর্তমান রূপটি হুসেন শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন হুসেন শাহী নির্মাণ করান।
ফিরোজ মিনারটি স্থাপন করেন সুলতান সৈফুদ্দিন ফিরোজ শাহ। ইলিয়াস শাহী বংশের দ্বিতীয় পর্বের সমাপ্তির পর বাংলার শাসনভার এসেছিলো হাবশী বংশের (১৪৮৭ থেকে ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দ) হাতে। সৈফুদ্দিন ফিরোজ শাহ ছিলেন এই বংশের দ্বিতীয় সুলতান। এই মিনারটির দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায় এটি একটি পাঁচ তলা বিশিষ্ট মিনার। প্রথম তিনটি তলা ১২ টি দিক বিশিষ্ট (Dodecagon) এবং উপরিস্থিত দুইটি তলা গোলাকার। এটি দিল্লীর কুতুব মিনার সদৃশ। কথিত আছে যে মিনারটির উচ্চতা সুলতানকে খুশি করতে না পারায় মিনারটির প্রধান আর্কিটেক্টকে সুলতান উপর থেকে নিচে ফেলে দেন, যদিও এই বিষয়ে ঐতিহাসিক তথ্য আমার জানা নেই। মিনারটির বাইরের দেওয়ালে বেশ কয়েকটি মৌচাক হয়েছে দেখলাম। মনে হয় এগুলি জায়ান্ট মৌমাছির (Giant honey bee: Apis dorsata) চাক, তারা এরূপ চাক তৈরী করে। 
হাবশী বংশের পরে বাংলার শাসনভার ন্যস্ত হয় হুসেন শাহী বংশের (১৪৯৪ থেকে ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দ) উপর, সেই বিষয়ে আসছি পরবর্তী পর্বে।

জানুয়ারী, ২০২৪

বি.দ্র. এই ভ্রমণ কাহিনীটি প্রথম আমার ব্লগে ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। পুনরায় ভ্রমণ কাহিনীটি এই সাইটে প্রকাশিত হলো।

সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)

Travel & Travelogue Blogs

Our Latest Travel & Travelogue Blogs

জব্বলপুর ভ্রমণ (Jabalpur Travel)

দীর্ঘদিন অনবরত কাজ করে বেশ হাঁফিয়ে উঠেছিলাম, অনেক দিন পর রাখী বা রক্ষাবন্ধনের ছুটি পাওয়া গেলো, পরদিন আবার রবিবার, কাজেই পরপর দু'দিন কর্মবিরতি, ঠিক করলাম জব্বলপুর থেকে ঘুরে আসবো।.....

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 22 September 2025
সিঙ্গাপুর: পর্ব-২ (Singapore: Part-2)

বন্ধুদের সাথে ঠিক করলাম, সম্মেলনের শেষ দিনে শেষ হওয়ার পর আমাদের হাতে কয়েক ঘন্টা সময় থাকবে, সেই সময় আমরা একটু ঘুরে দেখবো শহরটা। তবে একদিন একটু পর্যন্ত দুপুরে ঘুরে এলাম চাঙ্গি এয়ারপোর্ট। এই বিমানবন্দরটির মধ্যে রয়েছে একটি ট্রপিকাল ফরেস্টের ছোট সংস্করণ, যা অবশ্যই একটি মনোমুগ্ধকর দ্রষ্টব্য।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 4 Feb 2025
সিঙ্গাপুর: পর্ব-১ (Singapore: Part-1)

পূর্বে একাধিকবার উল্লেখ করেছি আমার ভ্রমণ অধিকাংশ সময়েই কর্মসূত্রে। এর একটা অসুবিধা হলো, ওই স্থানের অনেক দ্রষ্টব্য আমার সময়ের সংক্ষিপ্ততায় দেখা হয়ে ওঠেনা, আবার সুবিধা হলো, এমন কিছু দ্রষ্টব্য, বিশেষত ওই স্থান সম্পর্কিত এমন কিছু তথ্য (যা সম্পর্কে আমার আগ্রহ রয়েছে) জানা যায় বা আমার দেখা হয় যা হয়তো কেবলমাত্র পর্যটক হয়ে এলে দেখা হয়ে উঠতো না। গতবৎসর জুন মাসে একটি বিজ্ঞান সম্মেলনে যোগদান করতে গিয়েছিলাম সিঙ্গাপুরে, আর এই ভ্রমণ কাহিনীটি সেই বিষয়ে।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 3 Feb 2025
রাজমহল: পর্ব-২ (Rajmahal: Part-2)

ঘুম ভাঙলো প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের শব্দে। বাইরে তখন খুবই কুয়াশা, হোটেলের ঘরের কাঁচের জানলা বাষ্পে পূর্ণ, কিছুই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না, অবশেষে জানলা খুলে কুচকাওয়াজ দেখছিলাম। তারপর প্রস্তুত হয়ে আমরা আমরা বেরোলাম স্থানীয় বিভিন্ন দ্রষ্টব্যস্থান গুলির উদ্দেশ্যে। গতকাল ছিল ঐতিহাসিক ভ্রমণ, আর আজ আমরা সাক্ষী থাকবো প্রাগৈতিহাসিক কালের কিছু নিদর্শনের। ...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 28 Jan 2025
রাজমহল: পর্ব-১ (Rajmahal: Part-1)

মালদার নিকট মানিকচক ঘাট থেকে ভেসেলে গঙ্গা পার হয়ে আমরা পৌঁছলাম রাজমহল ঘাটে, তখন প্রায় ১'টা বাজে। মালদা ভ্রমণের পর এবার আমরা রাজমহল ঘুরব। ঝাড়খন্ড রাজ্যের সাহিবগঞ্জ জেলায় রাজমহল অবস্থিত, যা একদা মাল-পাহাড়িয়া উপজাতির গোষ্ঠী মাল রাজা শাসন করতেন। সকালে হোটেল থেকে প্রাতঃরাশ সেরেই বেরিয়েছিলাম আমরা।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 28 Jan 2025
মালদা: পর্ব-৩ (Malda: Part-3)

হাবশী বংশের পরে বাংলার শাসনভার ন্যস্ত হয় হুসেন শাহী বংশের (১৪৯৪ থেকে ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দ) উপর। আলাউদ্দিন হুসেন শাহ ছিলেন এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা।  বড়ো সোনা মসজিদ বা বারদুয়ারী মসজিদের নির্মাণ কার্য আলাউদ্দিন হুসেন শাহের সময়কালে আরম্ভ হলেও নির্মাণকার্যটি শেষ হয় নাসিরুদ্দিন নসরৎ শাহের আমলে।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 28 Jan 2025
মালদা: পর্ব-২ (Malda: Part-2)

গতকাল রেডিওতে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙলো বেশ ভোরে। হোটেলে প্রাতঃরাশ সকাল ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত। আমরা পৌনে ন'টার মধ্যে প্রাতঃরাশ সেরে ন'টা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। গতকালই আমি অটো-র জন্যে বলে রেখেছিলাম। সঠিক সময়ে আমাদের অটো চালক দাদা এসে গিয়েছিলেন। বর্তমানে মালদা শহরের দক্ষিণে গৌড় এবং উত্তরে রয়েছে পাণ্ডুয়া।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 28 Jan 2025
মালদা: পর্ব-১ (Malda: Part-1)

সকাল ন'টায় কলকাতা স্টেশন থেকে রওনা হয়ে ১২৩৬৩ কলকাতা-হলদিবাড়ি সুপারফাস্ট সঠিক সময় বিকাল ৩টে-তে মালদা টাউন পৌঁছলো। আর আমরা এসে পৌঁছলাম অতীতের মহানগর গৌড়ে।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 28 Jan 2025
থাইল্যান্ড: পর্ব-৬-পাটায়া (Thailand: Part-6-Pattaya)

আজ একটু বেলা করেই উঠলো সবাই। গত কয়েকদিন ধরে বেশ ভোর ভোরই উঠতে হচ্ছিলো সকলকে, আজ একটু বেশিক্ষন বিছানায় কাটানো যাচ্ছে, বেশ লাগছে। গতকাল একটি ফটো আমরা গাড়িতে ফেলে এসেছিলাম, তাই রুডিকে ফোন করে অনুরোধ করলাম সে যেন গতকালের গাড়িটিই আমাদের জন্যে আজকে পাঠায়, সেটিতেই আমরা যাবো পাটায়া।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 25 Jan 2025
থাইল্যান্ড: পর্ব-৫-ব্যাংকক (Thailand: Part-5-Bangkok)

আজ আমাদের ব্যাঙ্কক ঘোরার প্রথম দিন। প্রথমে আমরা যাবো ম্যাকলং রেলস্টেশনে (Maeklong Station)। রেললাইনের দু'পাশে পসরা সাজিয়ে বাজার বসেছে।  ট্রেনটি যখন আসে দোকানগুলির উপর থেকে চাঁদোয়াগুলি সরিয়ে নেওয়া হয়, সংকীর্ণ লাইনটি বেয়ে রেলগাড়িটি স্টেশনে আসে।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 25 Jan 2025
থাইল্যান্ড: পর্ব-৪-ফুকেট থেকে ব্যাংকক (Thailand: Part-4-Phuket to Bangkok)

আজও ঘুম ভাঙলো ভোর ৫ টায়। আসলে থাইল্যান্ড সময় দক্ষিণ কোরিয়ার সময়ের থেকে ২ ঘন্টা পিছিয়ে, আমার বায়োলজিক্যাল ক্লক অনুসারে আমি বাড়িতে সকাল ৭ টায় উঠি, কাজেই এখানে তাড়াতাড়ি আমার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। ...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 25 Jan 2025
থাইল্যান্ড: পর্ব-৩-ফুকেট থেকে বিভিন্ন দ্বীপ (Thailand: Part-3- Islands near Phuket)

আজ খুব ভোরে, প্রায় ৫ টা নাগাদ, ঘুম ভেঙে গিয়েছিলো। বাইরে তখনও অন্ধকার, বারান্দায় এসে বসলাম, একটু পরে আলো ফুটবে। বেশ ভালো লাগে ভোর হওয়া দেখতে। ৬টা নাগাদ সবাইকে ডেকে দিলাম, প্রাত্যহিক কাজ সেরে ফ্রেশ হয়ে চা-বিস্কুট খেয়ে আমরা অপেক্ষা করছিলাম। সাড়ে সাতটায় গাড়ি এলো আমাদের নিয়ে যেতে। আজ আমরা অনেকগুলি দ্বীপ ঘুরে দেখবো, সমুদ্র যাত্রা, সমুদ্রস্নান সবই হবে, কাজেই বাড়ি থেকে স্নান সেরে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 25 Jan 2025
থাইল্যান্ড: পর্ব-২-ফুকেট (Thailand: Part-2-Phuket)

অন্তর্দেশীয় বহির্গমন বিমানবন্দরের তিনতলায় অবস্থিত। পূর্বেই বলেছি এবার আমাদের যাত্রা ফুকেটের উদ্দেশ্যে। বিমানবন্দরে নির্দিষ্ট বিমানের কাউন্টার থেকে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করে, নিরাপত্তা পরীক্ষার পর যখন নির্দিষ্ট দ্বারের সামনে এসে পৌঁছলাম তখন হাতে বেশ কিছুটা সময় ছিল। মা বাবা'রা কলকাতা থেকে অনেক মিষ্টি নিয়ে এসেছিলেন, কয়েকটির সদ্গতি করে বিমানে চড়লাম।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 25 Jan 2025
থাইল্যান্ড: পর্ব-১ (Thailand: Part-1)

প্রায় দীর্ঘ সাড়ে তিন বৎসর পর কয়েকদিনের ছুটিতে সপরিবারে গিয়েছিলাম থাইল্যান্ড। আগামী কয়েকটি পর্বে আমি আমাদের এই ভ্রমণ কাহিনীটি বিস্তারিত লিখব। ...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 25 Jan 2025
উহান ডাইরি (Wuhan Diary)

উহান আজ বিশ্ববাসীর কাছে খুব পরিচিত নাম। কোভিড-১৯ এই শহরেই প্রথম সংক্রামিত হয়েছিল। আমার এই শহরের সাথে পরিচয় তার কিছু পূর্বে, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে। একটি বিজ্ঞান সম্মেলনে যোগদান করতে ওই বছর মে মাসে আমি উহান শহরে যাই।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 23 Jan 2025
শঙ্করপুর (Shankarpur)

২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে গিয়েছিলাম তাজপুর-শঙ্করপুর-দীঘা বেড়াতে। তাজপুর বেড়ানোর অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে একটি ব্লগ আমি পূর্বে লিখেছি। আজকের ব্লগে আমি শঙ্করপুর বেড়ানোর অভিজ্ঞতা লিখবো। ...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
বালাঘাটের অদূরে ঐতিহাসিক স্থান লাঞ্জি (Lanji: A historical place near Balaghat)

বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষের মৃত্তিকার প্রতিটি কণায় কান পাতলে শোনা যায় তার ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, আর দর্শন। এই বৈচিত্র্যময়তার সাথে একাত্মতা অনুভব করেই আমরা সেইস্থানের মাহাত্ম্য অনুধাবন করি।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
সোবেকসান ট্রেক (Sobaeksan trek)

আমি যে খুব ট্রেকিং প্রিয় মানুষ তা নয়, তবে বিগত কয়েক বৎসর ধরে, মানে আমার দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসের সময়কালের মধ্যে, বৎসরান্তে একবার গবেষণাগারের সকলের সাথে আমি কোনো না কোনো পর্বতে হাইকিং করতে যাই। করোনা মহামারীর পূর্বে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে গিয়েছিলাম সোবেকসানে (সোবেক পর্বতে, কোরিয়ান 'সান' শব্দটির অর্থ পর্বত), আবার ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসেও আমরা গিয়েছিলাম ওই পর্বতে।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
ইতিহাসের পটভূমিতে রাজগীর: ফিরে দেখা (Rajgir in the Background of History: A travelogue )

এ ভ্রমণ বৃত্তান্ত আমার ছোটবেলার, আমি তখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি। বাবার এক বন্ধুর পরিবারের সাথে আমরা গিয়েছিলাম রাজগীর। বাবাকে কখনওই বেড়ানোর দীর্ঘ পরিকল্পনা করতে দেখিনি, হঠাৎ করেই ঠিক করে ফেলতেন, কখনও টিকিট কেটে এনে বাড়িতে এসে আমাদের নিয়ে রওনা হতেন।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
একটা ছোট্ট ট্রিপ মুম্বইতে (A short trip to Mumbai)

মহানগরী মুম্বই, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যখন এসে পৌঁছলাম দুপুর প্রায় গড়িয়ে গেছে। এবার সোজা হোটেল। সাকিনাকা-তে আমাদের হোটেল, বিমানবন্দর থেকে বেশি দূরে নয়। আমাদের ফেরার ফ্লাইট সকালে, তাই এই জায়গাটা বেশ সুবিধার হলো আমাদের জন্যে। মুম্বই শহরে দীর্ঘদিন আমি কাটিয়েছি, কলেজের পাঠ শেষ করে কর্মসূত্রে এ শহরে আমি এসেছিলাম।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
তাজপুরের জীবনধারা আর উন্নয়ন: একটি ভ্রমণ কাহিনী (Livelihood and Development of Tajpur: A travelogue)

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বঙ্গোপসাগর উপকূলে অবস্থিত তাজপুর পশ্চিমবঙ্গের সৈকত পর্যটনের তুলনামূলক নতুন সংযোজন। দ্বাদশ পরিকল্পনা অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত যে চারটি পর্যটন বর্তনী (Circuit) শনাক্তকরণ  করা হয়েছিল তার মধ্যে প্রথমটি সৈকত কেন্দ্রিক (দীঘা -শঙ্করপুর - তাজপুর  - জুনপুট - মন্দারমনি) আর আমাদের গন্তব্য তাজপুর, জেলে বসতির উপর আধারিত এই পর্যটন কেন্দ্র।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
মুর্শিদাবাদ ভ্রমণ-পর্ব-২ (Murshidabad-Part-2)

সিরাজের মৃত্যুতে অবসান হল আফসার বংশের, ভারতবর্ষের ভাগ্যাকাশে নেমে এলো সূর্যাস্ত। শুরু হল মীর জাফর বংশ, ইতিহাসে যা নাজাফী বংশ বলে পরিচিত। ২৪ শে জুন ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে যখন পলাশির যুদ্ধ শেষ হয় আর ২৯শে জুন মীর জাফর মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে বসেন, রবার্ট ক্লাইভ যথার্থই বলেছিলেন এই জয় তাঁর নয় বরং এই জয় মীর জাফরের।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
মুর্শিদাবাদ ভ্রমণ-পর্ব-১ (Murshidabad-Part-1)

পড়ন্ত বেলাতেই এসে উপস্থিত হলাম অতীতের মহানগরী ‘মুক্সুবাদ’-এ। নগরীর বাঁ দিক দিয়ে বয়ে চলেছে ভাগীরথী নদী, এই নগরের উত্থান তাকে ঘিরেই। নদীপথে ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা হেতুই মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব নিযুক্ত তৎকালীন বাঙলা, বিহার আর উড়িষ্যার সুবেদার (পরবর্তীকালে ‘নবাব নাজিম’) মুর্শিদকুলী খাঁ ঢাকা থেকে ভাগীরথীর উপকণ্ঠে মুক্সুবাদে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন, তাঁর নামানুসারে নগরের নাম পরিবর্তিত হয়ে হল মুর্শিদাবাদ, সূচনা হল ভারতবর্ষের এক নতুন ইতিহাসের।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
বোলপুর শান্তিনিকেতন (Bolpur Santiniketan)

সকাল ১০ টা ১০ র শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস হাওড়া ছেড়ে যখন শান্তিনিকেতন পৌঁছালো তখন বেলা প্রায় সাড়ে বারোটা। বাইরে বেরিয়ে টোটো ধরে হোটেল পান্থনিবাসে পৌঁছলাম প্রায় দেড়টা নাগাদ।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 20 Jan 2025
পাঁচমাড়ি (Pachmarhi)

সময়ের অপ্রতুলতা জীবনধারণের সবক্ষেত্রে উপলব্ধি করলেও, বোধহয় সর্বাধিক প্রকট হয়ে ওঠে দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনের মধ্যে ভ্রমণের সময় অনুসন্ধানে। পাঁচমাড়ি ভ্রমণের সময়েও এর ব্যতিক্রম হয়নি।...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 13 Jan 2025
ইয়ংদক ক্র্যাব ভিলেজ এবং সামুদ্রিক খাদ্য (Yeongdeok Crab Village and Seafood)

আনদং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়ংদেওক বা ইয়ংদক (Yeongdeok, South Korea) সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব ৫৫-৬০ কিলোমিটারের মতন, সময় লাগে ঘন্টা খানেক। অপূর্ব সুন্দর সৈকতের পাশাপাশি ইয়ংদক বিখ্যাত তার মৎস বন্দর আর বিশেষত কাঁকড়ার জন্যে। ...

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 13 Jan 2025
হরিদ্বার (Haridwar )

যখন হরিদ্বার পৌঁছলাম ‘হর কি পাউরি’ ঘাটে সন্ধ্যারতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্রহ্মকুণ্ডের সামনে প্রথমে মাতা গঙ্গার বন্দনা আর তারপর পুরোহিতগণ নদীমাতৃকার উদ্দেশ্যে আরতি করেন, অগণিত ভক্ত সেই মঙ্গলারতি দর্শন করে নিজেদের ধন্য মনে করেন।........

  • সম্পত ঘোষ (Sampat Ghosh)
  • 13 Jan 2025